পালং শাক খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা
পালং শাক অনেক পুষ্টিকর জনপ্রিয় ও সুস্বাদু পাতা সবজি| এই সবজির মধ্যে অধিক
পরিমাণে ভিটামিন রয়েছে| পালং শাক বাংলাদেশ শীতকালে চাষ হয়ে থাকে| এই পালংশাকের
অনেক ধরনের জাত আছে| যেমন গ্রীন, সবুজ বাংলা ও টক পালং ইত্যাদি আরো অনেক
জাত রয়েছে|
পালং শাকের বীজ মূত্রের রোগ সারাই এবং তার কচি পাতা ফুসফুস কন্ঠনালী সমস্যা দূর
করে, শরীরের জ্বালাপোড়া সমস্যা দূর করে এই পালং শাক জন্ডিস
রোগীদের জন্য বেশ উপকারী| পোড়া ঘায়ে ক্ষতস্থানে পালন পাতার রস অনেক উপকার|
পেজ সূচিপত্র পালং শাকের উপকারিতা ও অপকারিতা
পালং শাক খাওয়ার উপকারিতা
পালং শাক খাওয়ার উপকারিতা পালং শাক শীতকালীন ফসল যা আমরা শীতকালে পেয়ে থাকি|
পালং শাকে আছে উচ্চ মাত্রার ম্যাগনেসিয়াম যা রক্তচাপ কমাতে সাহায্য করে এতে থাকা
বেশি মাত্রা ভিটামিন এ, লিম্ফোসাইট রক্তের শ্বেত কণিকা দেহকে বিভিন্ন সংক্রমণ রোগ
থেকে রক্ষা করে এতে থাকা দশটিও বেশি ভিন্ন ধরনের ক্যান্সার সহ বিভিন্ন জটিল
রোগের বিরুদ্ধে কাজ করে| এর উচ্চমাত্রার বিটা ক্যারোটিন চোখের ছানি
পড়ার ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করে|
এর ভিটামিন এ ত্বকের বাইরের স্তরের আদ্রতা বজায় রাখতে সাহায্য করে| পালং শাকের
আরো কিছু উপকারিতা রয়েছে, পালন শাক অন্ত্রের ভেতরে জমে থাকা মূল সহজে বের
করে দিতে সহায়তা করে| যার কারণে যাদের কন্ঠ কাঠিন্য আছে তাদের জন্য এ শাক খুব
উপকারী| পালং শাকে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন এ বি সি ই এবং আয়রন| এর জন্য
পালন শাক খেলে রক্তে আয়রনের মাত্রা বেড়ে যায়| এছাড়াও সহজলভ্য এ শাকটিতে
রয়েছে অনেক খাদ্যগুণ| ভিটামিন ধরনের রোগ প্রতিরোধের ক্ষমতা|
গর্ভাবস্থায় পালংশাক খাওয়ার উপকারিতা
গর্ভাবস্থায় পালং শাক খাওয়ার উপকারিতা| পালং শাক শিশুর মস্তিষ্কের বিকাশ
ও ইমিউন সিস্টেম শক্তিশালী করতে ডায়েটে প্রাধান্য দিন পালং শাককে| হবু
মা অ্যানিমিয়া বা রক্তস্বল্পতায় ভুগলে নিয়মিত তাকে পালন শাক খেতে হবে|
আপনাদের মনে একটা প্রশ্ন আসতে পারে যে পালং শাক কি গর্ভাব্যবস্থার জন্য ভালো?
হ্যাঁ, কিন্তু শুধুমাত্র পরিমিত পরিমাণে| গর্ভবতী মহিলাদের খাদ্য তালিকায় যে
অত্যাবশ্যক উপাদান গুলো অন্তর্ভুক্ত করা উচিত তার মধ্যে একটি হল ফলিক এসিড|
এই ফলিক এসিড পালং শাকে প্রচুর পরিমাণে পাওয়া যায়| ফলিক
অ্যাসিড গ্রহণ মাধ্যমে জন্মগত বিকৃতি এড়ানো যায়| এই শাকে আয়রনও
রয়েছে যা গর্ভাবস্থায় এটি প্রচুর পরিমাণে দরকারি ও প্রয়োজন
ভিটামিন| আপনারা আরেকটি কথা মনে রাখবেন বেশি পালং শাক যাতে না খাওয়া
হয় সে দিকটাই খেয়াল রাখতে হবে, এই অবস্থায় আপনার নিজেকে সতর্ক থাকতে হবে|
যেমন গর্ভাবস্থায় মহিলাদের কিডনিতে পাথর হওয়ার প্রবণতা যদি থাকে|তাহলে সীমিত
পরিমাণে পালন শাক খাওয়া দরকার|
পালং শাক গর্ভ অবস্থায় আরো অনেক কাজে লাগে| আর পালং শাকে রয়েছে
ক্যালসিয়াম, ভিটামিন, আয়রন ইত্যাদি| গর্ভাবস্থায় পুষ্টির ঘাটতি
পূরণ করার জন্য আপনি যে খাবারগুলো খান তার সঙ্গে এই পালং শাক খেলে আপনার অনেক
উপকার পাবেন| খাদ্য তালিকা গত ফাইবার এবং ওমেগা ৩ খেপি এসিডের একটি
ভালো উৎস| পালং শাকে বিভিন্ন ধরনের পুষ্টি উপাদান রয়েছে যা শুধু মার
নয় শিশুর জন্য অনেক উপকারী এবং পুষ্টিকর একটি খাদ্য|
পালং শাকে কি ভিটামিন থাকে
পালংশাকে কি ভিটামিন থাকে তাই নিয়ে আজকে আমরা আলোচনা করব| পালং শাক একটি
শীতকালীন ফসল দিতে অনেক ধরনের পুষ্টি ও ভিটামিন রয়েছে| পালং শাকে রয়েছে
ভিটামিন এ সি এবং কে ভরপুর মাত্রায় থাকে, যা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করতে
সাহায্য করে| দৃষ্টিশক্তি ভালো রাখতেও পালং শাক উপকারী| এই শাক আয়রনে পরিপূর্ণ,
যার শরীরে অক্সিজেন পাওয়ার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ উপাদান| রক্তাল্পতার
বিরুদ্ধে লড়াই করতে এই শাক বেশ উপকারী|
পালং শাক খেতে যেমন মজা তেমনি কাজেও দারুণ| শাকটিতে রয়েছে অনেক উপকারী
পুষ্টি উপাদান এই পালং শাক খেলে প্রতি ১০০ গ্রাম পালং শাকের
প্রোটিনের পরিমাণ ২.০ গ্রাম, কার্বোহাইড্রেট ২.৮ গ্রাম, ফসফরাস ২০.৩
মিলিগ্রাম, আয়রন ১১. ২ মিলিগ্রাম, নিকোটিনিক অ্যাসিড
০.৫ মিলিগ্রাম, অক্সালিক এসিড ৬৫২ মিলিগ্রাম, ক্যালসিয়াম ৭৩ মিলিগ্রাম,
পটাশিয়াম ২০৮ মিলিগ্রাম| এতে আঁশের পরিমাণ ০. ৭ মিলিগ্রাম|
তাই সাতটি খাওয়ার মাধ্যমে আমরা সুস্থ থাকা সহ অনেক অসুখ বিসুখের হাত থেকে রেহাই
পেতে পারে| চলুন জেনে নেই পালং শাকের এমন ১০ টি উপকারের কথা| যেমন রক্তচাপ কমাতে,
দেহের ওজন কমাতে, কন্ঠ কাটিন্ন দূর করে| চোখ ভালো রাখতে, ত্বকের স্বাস্থ্য ভালো
রাখতে, দেহের ক্লান্তি ভাব দূর করতে, প্রদাহ জনিত সমস্যা রোধ করতে, হৃদ যন্ত্রকে
সুস্থ রাখতে, দেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধিতে, ক্যান্সারের বিরুদ্ধে কাজ
করে|
পালং শাকের জুসের উপকারিতা
পালং শাকের জুসের উপকারিতা সম্পর্কে অনেকেরই অজানা| কিন্তু পালং শাকে জুসের
মধ্যে রয়েছে অনেক উপকারী পুষ্টিগুণ যদি আপনি এই রসে মিশিয়ে নিতে হবে আরো কিছু
উপাদান অনেক বেশি পুষ্টিগুণ পাবেন| এর সঙ্গে মেশাতে পারেন টমেটো রস এই দুটি
একসঙ্গে মিশিয়ে পান করলে এটি আপনার ক্লান্তিবোধ দূর করবে, শরীরের দুর্বলতা দূর
করবে এবং অলসতা দূর করতে সহায়তা করবে| পালং শাকের মধ্যে এত পুষ্টি রয়েছে যা
গুনে শেষ করা যাবে না|
তাই নিয়মিত এই শাক আমাদের খাবারের তালিকায় রাখার পরামর্শ দিয়ে থাকেন
বিশেষজ্ঞরা| তবে আপনি চাইলে এই শাকের জুস করেও খেতে পারেন| এতে কিন্তু
উপকার মিলবে অনেক বেশি| সকল জটিল ও কঠিন রোগ থেকে বাঁচাতে সাহায্য করে
থাকে| চলুন আমরা জেনে নিই পালং শাকের জুস কখন খাওয়া উচিত| পালন শাকের রসে
সর্বাধিক উপকার পেতে, সপ্তাহে একবার থেকে দুইবার সকালে খালি পেটে
খেতে হয়|
এটি স্বাস্থ্যকর উজ্জ্বল ত্বক, বৃদ্ধি এবং শরীরকে ডিটক্সিফাই করার জন্যও সুপারিশ করা হয়| এ জুসের কিছু ক্ষতিকর দিকও রয়েছে| পালং শাকের রসে প্রচুর পরিমাণে
এন্টিঅক্সাইডের এবং উপকারী যৌগ রয়েছে যা আপনার দৃষ্টি রক্ষা করতে পারে|
রক্তচাপ কমাতে পারে এবং চুল ও ত্বকের স্বাস্থ্যর উন্নতি করতে পারে, যাইহোক, এতে
ফাইবার কম এবং এটি একটি উপযুক্ত খাবার প্রতি স্থাপন নয়, কারণে
এতে প্রোটিন এবং স্বাস্থ্যকর তোরবির মতো গুরুত্বপূর্ণ পুষ্টির অভাব
রয়েছে|
পালং শাক খাওয়ার নিয়ম
পালং শাক খাওয়ার নিয়ম আমরা সবাই পালং শাক দেখেছি কিন্তু এই পালং শাক
কিভাবে খেতে হয় তা অনেকেই জানিনা| যেকোনো জিনিসের কিছু নিয়ম-নীতি থাকে|
নিয়ম অনুসারে ক আইলে বা কাজ করলে তার পরিপূর্ণ গুণাগুণ পাওয়া যায়| তেমনি পালং
শাক খাওয়ার কিছু সঠিক নিয়ম রয়েছে| গবেষকরা দেখেছেন, মাইক্রোওয়েভ ওভেনে
পালংশাক গরম করলেও লুটেইন কমে যায়| তাই গবেষকরা পরামর্শ দিয়েছেন রান্না না
করে পালং শাক খাওয়া যায়| সালাদে অথবা সুমদি খাওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন
তারা|
তার সঙ্গে ক্রিম দুধ অথবা দই যোগ করে নিলে খাবারটা অনেক সুস্বাদু ও
পুষ্টিকর হবে| আমরা এখন পালং শাক খাওয়ার নিয়ম নিয়ে আলোচনা করা হলো| পালং শাক
ভাজার সময় পানি লাগে|
কারণ যদি পানি ফেলে দেওয়া হয় তাহলে সে পানির সাথেই শাকের উপকারিতা গুলো
ফেলে দেওয়া হলো বা বেরিয়ে যাবে|
ও পালং শাক নিচে রান্না করে খেলে শরীরের
জন্য অনেক উপকার হয় পাঁচমিশালী তরকারির সাথে মিশিয়ে পালং শাক খাওয়া যায়| যেমন
সিম ছেলে উপকারিতা তো পাবেই তার সঙ্গে অন্য তরকারির গুনাগুন ও ভিটামিন গুলো
পাওয়া যাবে|
পালং শাক চাষ করার পদ্ধতি সম্পর্কে জানুন
-
পালং শাকের জাত গুলো: কপি পালং, পোষা জয়ন্তী, সবুজ বাংলা,
টক পালং ও গ্রিন| এছাড়া রয়েছে ব্যানার্জি পুষ্প জ্যোতি,
নোবেল জয়েন্ট ইত্যাদি|
- মাটি: দোআঁশ উর্বর মাটি বেশি উপকারী| এ ছাড়া এঁটেল, বেলে দোআঁশ মাটিতেও চাষ করা যায়|
জমি তৈরি: জমি চাষ ও মই দিয়ে মাটি মিহির করে তৈরি করতে হয়|
সারের নাম এবং শতক প্রতি পরিমান:
গোবর ৪০ কেজি
ইউরিয়া ১ কেজি
টিএসপি 500 গ্রাম
এমপি ৫০০ গ্রাম
সার প্রয়োগের নিয়মাবলীঃ ইউরিয়া ছাড়া সব সার জমির শেষ চাষের সময় দিতে
হয় তবে গোবর জমির তৈরির প্রথমেই দিকে প্রয়োগ করা উত্তম| ইউরেশার
চারা গজানোর ৮-১০ দিন পর থেকে ১০-১২ দিন পর ৩-৪ কিস্তিতে ও
পরি প্রয়োগ করে মাটির সাথে মিশাতে হবে|
আল নির্বাচন ও তৈরি: জমিতে আল তৈরি করলেও শাক চাষ করা যায় উঁচু
ওয়াল পালং শাকের জন্য নির্বাচন করা হয়| উঁচু আলে কিছুটা আগাম পালং
শাক বীজ বপন করা হয়| কোদাল দিয়ে আলের মাটি কুপিয়ে আগাছা পরিষ্কার করে মাটি
তৈরি করতে হয়|
চারা রোপন অথবা বীজ বপন: জমির আলে গর্ত তৈরি করে বা সরাসরি বীজ
ছিটিয়ে মাদায় বীজ বপন করতে হয় বা বীজ তলায় বীজ তৈরি করে সেই বীজ
রোপন করলেও পালং শাক চাষ করা যায়| বীজ বপনের পূর্বে প্রায় ২৪ ঘন্টা পানিতে
ভিজিয়ে রাখতে হয়| নির্দিষ্ট দূরত্বে গর্ত তৈরি করার পর প্রতি মাদায়
২-৩ টি করে বীজ বপন করা যায় ইত্যাদি|
পালং শাক নিয়ে লেখকের শেষ কথা
পালং শাক খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা বিষয় নিয়ে আজকের আর্টিকেলে আপনারা
অবশ্যই জানতে পেরেছেন| যে পালং শাক খেলে কি উপকার পাওয়া যায় এবং কোন
কোন কাজে লাগে| আশা করছি আজকের এই আর্টিকেলটিতে পালং শাক
সম্পর্কে জানতে পেরেছেন| এই আর্টিকেলটি সম্পূর্ণ পড়ে এবং আমাদের সঙ্গে
এতক্ষণ থাকার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ| যদি এইরকম স্বাস্থ্য মূলক ও উপকারী
পোষ্ট পেতে চান তাহলে আমাদের ওয়েবসাইট টিকে ফলো দিয়ে রাখুন| আশা করছি আমাদের
ওয়েবসাইটটিতে নিয়মিত এরকম গুরুত্বপূর্ণ পোস্ট পাবেন|
samone agie jaw doua roilo
Thanks you